মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, “যারা প্রকৃত মৎস্যজীবী তারা কখনোই জাটকা ধরে না বা আইন ভঙ্গ করে না।” বরং কিছু দুষ্ট ব্যবসায়ী, যারা দাদনের মাধ্যমে জেলেদের উপর প্রভাব খাটায় এবং অবৈধভাবে জাটকা ধরে, তারাই প্রকৃত অপরাধী।
সোমবার বিকালে রাজধানীর যাত্রাবাড়িস্থ দয়ালভরসা মৎস্য বাজারে ‘জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ ২০২৫’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার হিসেবে আমরা এমন কিছু কাজ করতে চাই যা মানুষের দুঃখ-কষ্ট লাঘবে সহায়ক হবে। যেখানে বৈষম্য ও অবিচার আছে, সেখানেই আমাদের মনোযোগ।”
উপদেষ্টা জানান, যাত্রাবাড়িতে একটি স্বাস্থ্যসম্মত মাছের বাজার কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হবে, যেখানে প্রতিটি অংশ আলাদা এবং পরিচ্ছন্ন থাকবে। এই কমপ্লেক্স নির্মাণে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দপ্তরের সহযোগিতা নেওয়া হবে।
মৎস্য ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলার প্রতিশ্রুতি দেন ফরিদা আখতার। তবে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “দয়া করে মাছের দাম অহেতুক বাড়াবেন না।”
তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখে পান্তা-ইলিশ আমাদের সংস্কৃতির অংশ নয়। এই সময়ে কোন ইলিশ সরবরাহ করা হবে না বলেও সবাইকে সতর্ক করেন। একই সঙ্গে হিমায়িত ইলিশ সরবরাহ করে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত না করার অনুরোধ জানান।
উপদেষ্টা বলেন, “জুনের পর এই জাটকা যখন ইলিশে পরিণত হবে, তখন তা বাজারে আসবে। দেশের ৯০ শতাংশ খেটে খাওয়া মানুষ যেন ইলিশ কিনে খেতে পারে, সেজন্য আমাদের এখন থেকেই কাজ করতে হবে।”
ফরিদা আখতার আড়তদারদের উদ্দেশ্যে বলেন, “প্রতিজ্ঞা করেন জাটকা ধরবেন না এবং জুনের পর ইলিশের দাম অহেতুক বাড়াবেন না।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মোঃ আবদুর রউফ। স্বাগত বক্তৃতা দেন ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক মোঃ মনিরুল ইসলাম।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন মৎস্য অধিদপ্তরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মাসুদা খানম, উপপরিচালক সাজদার হোসেন, ঢাকা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. আয়েশা সিদ্দিকা, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে মোঃ ফেরদৌস, দয়াল ভরসা মৎস্য আড়তের সভাপতি দিব্যেন্দু রায় ভুলু বাবু, সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন এবং বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিক্রেতা ও শ্রমিকরা।
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ