মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র ইস্যুতে যখন আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়ছে, তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওভাল অফিসে বসে তার সরকারের স্পষ্ট অবস্থান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র থেকে বিরত থাকতে হবে, এবং যদি তারা সমঝোতায় না আসে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে “ভয়ানক কিছু” করার হুমকি দেন তিনি।
ট্রাম্প তার বক্তব্যে স্পষ্টভাবে বলেন, “ইরানকে অবশ্যই পারমাণবিক অস্ত্রের চিন্তা বাদ দিতে হবে। তাদের হাতে এমন ধ্বংসাত্মক অস্ত্র থাকা কোনোভাবেই চলবে না।” তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র চায় ইরান সমৃদ্ধ হয়ে উঠুক, কিন্তু একমাত্র শর্ত হলো—পারমাণবিক অস্ত্রের উৎপাদন থেকে বিরত থাকতে হবে।
এদিকে, ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিতীয় দফা বৈঠক নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। রোম না ওমান, এই নিয়ে চলছে দ্বন্দ্ব। যদিও যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি আলোচনায় বসতে চায়, ইরান এখনো অতীতের ঘটনাবলি ভুলে আমেরিকার ওপর আস্থা রাখতে পারছে না।
আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার (IAEA) রিপোর্ট অনুযায়ী, ইরান বর্তমানে যে পরিমাণ ইউরেনিয়াম মজুত করেছে, তা দিয়ে ছয়টি পারমাণবিক বোমা তৈরি করা সম্ভব। এই তথ্য সামনে আসতেই আন্তর্জাতিক উদ্বেগ আরও বেড়ে গেছে।
ট্রাম্পের কণ্ঠে ছিল এক ধরনের হুঁশিয়ারি, যখন তিনি বলেন, যদি ইরান সমঝোতায় না আসে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্র “ভয়ানক কিছু” করবে। সাংবাদিকরা যখন প্রশ্ন করেন, এই ‘ভয়ানক কিছু’ বলতে কি সামরিক হামলার ইঙ্গিত, তখন ট্রাম্প সোজাসাপ্টা জবাব দেন—”অবশ্যই।”
ট্রাম্প তার বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ববর্তী প্রশাসনের বিরুদ্ধে অসন্তোষও প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “ইরান এতদিন যুক্তরাষ্ট্রের অযোগ্য নেতৃত্বের সঙ্গে ডিল করেছে, তাই তারা এখনো আমাদের বোকা ভাবছে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই বক্তব্য শুধু একটি হুমকি নয়, বরং এটি একটি কূটনৈতিক বার্তাও। ট্রাম্প দাবি করেন, এই সিদ্ধান্ত তারা কেবল নিজেদের জন্য নিচ্ছে না, বরং গোটা বিশ্বের নিরাপত্তার কথা ভেবে নিচ্ছে। তার মতে, ইরান একটি চরমপন্থী দেশ, এবং তাদের হাতে পারমাণবিক অস্ত্র থাকা পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।
সব মিলিয়ে, মধ্যপ্রাচ্যে যেন আবারও বারুদের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে। কূটনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠছে—তবে কি এবার সত্যিই ইরান সামরিক হামলার মুখোমুখি হতে চলেছে?
তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ