ওবায়দুল কাদেরের আওয়ামী লীগের নতুন সদর দপ্তরে না যাওয়ার কারণ

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। ক্ষমতা হারানোর পর থেকেই দলটির শীর্ষ নেতাদের অনেকেই আত্মগোপনে চলে যান। এর মধ্যে অনেকে আশ্রয় নেন পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে। দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় ও প্রভাবশালী নেতারাও এখন রয়েছেন ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে।

বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার রোজডেল গার্ডেন এলাকার তিন নম্বর অ্যাকশন এরিয়ার দুই নম্বর টাওয়ারের ১১ তলার ১১-সি ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি সেখানে স্ত্রী, মেয়ে এবং জামাতাকে নিয়ে অবস্থান করছেন। নিউটাউনের এই অভিজাত এলাকায় আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনার এই ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী সেখানে বেশ সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।

শুধু বসবাসই নয়, ওই ভবনের নিচ তলায় আরও একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছেন কামাল। সেটি বর্তমানে কার্যত আওয়ামী লীগের অস্থায়ী দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রতিদিন বিকাল ৫টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত এই ফ্ল্যাটে কলকাতায় আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও রয়েছেন কলকাতায়। দলের সাবেক এক সংসদ সদস্যের সহায়তায় তিনি নিউটাউন এলাকার একটি ফ্ল্যাটে স্ত্রীকে নিয়ে বসবাস করছেন। তবে বর্তমানে তিনি শারীরিকভাবে বেশ অসুস্থ। এজন্য ভারতে থাকা আওয়ামী লীগের অন্য নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তার তেমন কোনো যোগাযোগ নেই বলেই জানা গেছে।

দলীয় সূত্রগুলো জানায়, কলকাতায় যে জায়গাটিকে আওয়ামী লীগের অস্থায়ী দলীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেখানে ওবায়দুল কাদেরকে কখনো দেখা যায় না। এমনকি দলের ভেতর থেকেও অনেকেই তাকে আর চাচ্ছেন না। সূত্র জানায়, কাদের নিজেও বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছেন। তার শারীরিক দুর্বলতা ও রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা তাকে দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে।

গণঅভ্যুত্থানে সরকারের পতনের পর ভারতে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা সেখানে দল পুনর্গঠনের চেষ্টা চালালেও অভ্যন্তরীণ বিভাজন, শারীরিক অসুস্থতা ও নেতৃত্ব সংকটে দলটির ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কলকাতায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড এখন অনেকটাই সীমাবদ্ধ একক নেতৃত্বের উপর, যেখানে দলীয় ঐক্যের ঘাটতি স্পষ্ট।

তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *