ওয়াক্ফ আইনের বিরোধিতা করে শুক্রবার (গতকাল) জুমার নামাজের পর কলকাতার ধর্মতলা এলাকায় ব্যাপক বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। টিপু সুলতান মসজিদ এবং জাকারিয়া স্ট্রিটের নাখোদা মসজিদের পক্ষ থেকে আয়োজিত এই প্রতিবাদ কর্মসূচিতে রাজপথ অবরোধ করেন বিক্ষুব্ধ মুসলিম সমাজের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ মানুষ।
প্রতিবাদের সময় বিক্ষোভকারীরা হাতে প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। লাগাতার শাউটিং চলতে থাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা দুই নেতার কুশপুতুল দাহ করে প্রতিবাদ জানান।
বিক্ষোভ শেষে একটি পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপাল ড. সি ভি আনন্দ বোসের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন। প্রতিনিধি দলের দাবি ছিল, অবিলম্বে ওয়াক্ফ বিল প্রত্যাহার করতে হবে এবং এই বিষয়টি যেন রাজ্যপাল দেশের প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে অবগত করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া মুসলিম নেতারা স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “আমরা এ আইন মানি না, এ আইন মুসলিমবিরোধী।” তাদের আশঙ্কা, এই আইনের মাধ্যমে মসজিদ, কবরস্থান ও দরগার মতো ধর্মীয় ওয়াক্ফ সম্পত্তি কেড়ে নেওয়া হবে।
বিক্ষোভকারীদের বক্তব্যে উঠে আসে, ভারতের স্বাধীনতার আগ থেকেই ওয়াক্ফ আইন ছিল এবং সেই অনুযায়ী মুসলমানদের ধর্মীয় সম্পত্তি সংরক্ষিত ছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন বিলের কোনো প্রয়োজন ছিল না। তারা জোর দিয়ে বলেন, “এই ওয়াক্ফ সম্পত্তি মুসলমানদের সম্পত্তি ছিল, আছে এবং থাকবে।”
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নেতারা অভিযোগ করেন, “নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার শুধুমাত্র মুসলমানদের ক্ষতি চায়।” তাদের দাবি অনুযায়ী, ওয়াক্ফ বিল এনে মুসলিম সমাজের ধর্মীয় অধিকার হরণ করার চেষ্টা চলছে, যা কখনোই মেনে নেওয়া হবে না।
ওয়াক্ফ আইন নিয়ে মুসলিম সমাজের মধ্যে যে অসন্তোষ তৈরি হয়েছে, তার বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল কলকাতার রাজপথে। ধর্মতলায় সড়ক অবরোধ, কুশপুতুল দাহ এবং রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি—সবই এই প্রতিবাদের তীব্রতা ও গুরুত্বকে প্রকাশ করে। এখন দেখার বিষয়, এই প্রতিবাদের পর কেন্দ্রীয় সরকার কী অবস্থান নেয় এবং ওয়াক্ফ আইন নিয়ে কোনো পরিবর্তন আসে কিনা।
তথ্যসূত্র: কালের কণ্ঠ