বকশীগঞ্জে ঘুষ ছাড়া মেলে না ভূমিসেবা

বকশীগঞ্জ উপজেলার ভূমি অফিসগুলো এখন দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে ঘুষের ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে টাকা। জমির নামজারি এবং অন্যান্য ভূমি সেবা নিতে গিয়ে সেবাগ্রহীতারা প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। স্থানীয় প্রশাসনের নির্বিকার ভূমিকা এবং ভূমি কর্মকর্তাদের অতিরিক্ত টাকার চাহিদা সাধারণ মানুষের জীবনে দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বকশীগঞ্জ উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ভূমি অফিসে একই চিত্র। অভিযোগ রয়েছে, টাকা ছাড়া ফাইল নড়ে না এসব অফিসের কর্তাদের কাছে। সেবা নিতে আসা মানুষদের ভুলিয়ে-ভালিয়ে সিনিয়র কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে টাকা আদায় করা হয়। আর, টাকা না দিলে বিভিন্ন অজুহাতে নামজারি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে সেবাগ্রহীতাদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।

সম্প্রতি, বগারচর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে এক গণমাধ্যমকর্মী সাক্ষাৎকার নেন যেখানে একটি ভুক্তভোগী ব্যক্তি জানায়, তাকে নামজারির জন্য ১২ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। ওই ব্যক্তি বলেন, তিনি দুই ধাপে ১২ হাজার টাকা দিয়েছেন, কিন্তু জমির নামজারি না হওয়ায় তার টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর, ৮ এপ্রিল বগারচর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের নায়েব সাজ্জাত হোসেনকে বদলি করা হয়। তবে বদলি হলেও তার খেসারত এখনও অনেক সেবাগ্রহীতার পিছু ছাড়েনি।

অন্য একটি ঘটনা থেকে জানা গেছে, এক ভুক্তভোগী নারী জানান, নামজারির জন্য অতিরিক্ত টাকা নিয়েও ভূমি কর্মকর্তা কাজ না করে তাকে টালবাহানা করেছিলেন। বদলি হওয়ার পর, তিনি হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এছাড়াও, ৭টি ইউনিয়ন ভূমি অফিসেই ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। ভূমি কর্মকর্তাদের মনের মতো টাকা না দিলেই জমি নামজারি না করে, উল্টো অন্যের নামে নামজারি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, ভুক্তভোগীরা জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য বগারচর ইউনিয়নের নায়েব সাজ্জাত হোসেনকে বার বার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা উল হুসনা জানিয়েছেন, বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে বগারচর ইউনিয়নের নায়েবকে বদলি করা হয়েছে।

তথ্যসূত্র: দৈনিক জনকণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *